• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বিমানের পাইলটদের আল্টিমেটাম

অনলাইন ডেস্ক / ২১৭ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

অন্যান্য স্টাফদের সঙ্গে বৈষম্য ও বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলটরা। এ জন্য আগামী ৩০ জুলাই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)।

আজ বৈঠকে বসবে বাপা। জানা গেছে, এই বৈঠক থেকেই দাবি আদায়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে সোমবার (১২ জুলাই) বাপার সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বিমানের পরিচালক ফ্লাইট অপারেশনকে (ডিএফও) একটি চিঠি দেন।

চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যার করতে হবে। অন্যথায় চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করবে না তারা।
বাপার দাবি, করোনার মধ্যেও তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছেন তাদের পাইলটরা। এটি করতে গিয়ে ২৫ জন পাইলট এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও পাইলটদের ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে উল্টো বেতন কর্তন করা হচ্ছে।

ফ্লাইট অপারেশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যদি পাইলটরা এগ্রিমেন্টের বাইরে ফ্লাইট না করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে বিমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রুট আবুধাবী, দোহা, দাম্মাম ও দুবাই ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বাপার সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনা মহামারির ক্ষতি পোষাতে ব্যয় সংকোচনে নেওয়া বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হলেও ফ্রন্টলাইনার হিসেবে পাইলটদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়নি।

তিনি বলেন, করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে পাইলটরা ঝুঁকি নিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন।এক বছরে ২৫ জন পাইলট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এখনো একাধিক পাইলট করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। আটজন পাইলটের পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফ্লাইট করে এসে তারা কোয়ারেন্টির করারও সুযোগ পাননি। ফ্লাইট নিয়ে বিদেশে গিয়ে নিজের টাকায় করোনা টেস্ট করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেনি বিমান। বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের কারণে একজন সিনিয়র পাইলটের বেতন সাড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এটা তাদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ।

ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, অ্যাডমিন অর্ডারে বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু পাইলটদের করা হয়নি।  আজ (বুধবার) বাপার নির্বাহী কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সংক্রান্ত অ্যাডমিন অর্ডার জারি করা হয়। জুলাই থেকে এটি কার্যকর করা হবে।

আগের অর্ডারে বেতন ক্রম ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে যারা ছিলেন তাদের বেতন ১০ শতাংশ এবং বেতন ক্রম ৯ এর ঊর্ধ্বে যারা ছিলেন তাদের বেতন ১৫ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত ছিল। জুলাই থেকে এটি আর কর্তন করা হবে না।

একই অ্যাডমিন অর্ডারে বলা হয়েছে, ককপিট ক্রুদের (পাইলট) মধ্যে যাদের চাকরির বয়স ৫ বছরের মধ্যে তারা এই সুবিধা পাবে। আগে তাদের বেতন ১৫ শতাংশ কর্তন করা হতো। জুলাই থেকে আর তা কর্তন করা হবে না। তবে এই সংখ্যা মাত্র ১০ জন।

অপরদিকে যাদের চাকরির বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে তাদের বেতন ২০ শতাংশের বদলে জুলাই থেকে ৫ শতাংশ কর্তন করা হবে। এবং যাদের বয়স ১০ বছরের বেশি তাদের বেতন ৪০ শতাংশের বদলে ২৫ শতাংশ কর্তন করা হবে।

তবে পাইলটরা বলেছেন, ওভারসিস অ্যালাউন্স বাদ দিয়ে এভাবে সমন্বয় করায় তাদের বেতন কর্তন ২৮ শতাংশ হবে।

পাইলটরা বলেছেন, এমন সিদ্ধান্ত বিমানে বৈষম্য তৈরি করেছে। তারা বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘরে বসে অফিস করছেন। কিন্তু তাদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল। অপরদিকে পাইলটরা পবিবার পরিজন ফেলে চরম ঝুঁকি নিয়ে ফ্লাইট চালিয়ে গেলেও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটি চরম অবিচার। তাদের প্রতি চরম অসম্মান ও অসৌজন্যমূলক আচরণ।

তারা আরও বলেন, যদি ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সবকিছু জানাব। প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।


আরো পড়ুন