• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

“আমাকে চেনেন? আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর লোক! গ্রাহককে ব্যাংক ম্যানেজারের হুমকি !

রকিবুজ্জামান, মাদারীপুর প্রতিনিধি / ১৯৬ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর শাখা জনতা ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ী গ্রাহকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে। ১০ মাসেও চেক বই না পেয়ে ওই গ্রাহক কিছুটা রাগান্বিত হন ব্যাংক ব্যবস্থাপকের সঙ্গে। এ সময় গ্রাহককে হুমকি দিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপক বলেন, ‘আপনি আমাকে চিনেন? আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক’।
মস্তফাপুর শাখা জনতা ব্যাংক ব্যবস্থাপক মো. আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন মাদারীপুর সদর উপজেলা মস্তফাপুর এলাকার বাসিন্দা ও হাওলাদার কনস্ট্রাকশনের মালিক ইলিয়াস হাওলাদার। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী।
সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে ইলিয়াস হাওলাদার জানান, গত বছর (২০২০) ১২ আগস্ট তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাওলাদার কনস্ট্রাকশনের চেক বই পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। আবেদন করার কিছু দিন পর সে সময়ের ব্যাংকের ব্যবস্থাপক পরিবর্তন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আইয়ুব আলী নামে নতুন ব্যবস্থাপক হিসেবে আশার পর ইলিয়াস হাওলাদার ব্যাংকে গিয়ে তার চেক বইয়ের খোঁজ নিতে যান। এ সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে বলেন, আপনার চেক বই প্রাপ্তির আবেদন ফরমটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, পুনরায় আবেদন করেন’।
জানা গেছে, এরপর ইলিয়াস হাওলাদার চলতি বছরের (২০২১) ১৪ ফেব্রুয়ারি পুনরায় আবেদন করেন। আবেদন করার পর থেকে বেশ কয়েক বার ব্যাংকে গিয়েও চেক বই পাননি ইলিয়াস হাওলাদার। সর্বশেষ গত রবিবার (৮ জুন) তারিখে ইলিয়াস হাওলাদার ব্যাংকে যান চেক বই নিতে। তখন ব্যাংক ব্যবস্থাপক ইলিয়াস হাওলাদারের ওপর ক্ষিপ্ত হন বারবার চেক বই নিতে আসার জন্য।
তখন ইলিয়াস হাওলাদারও কিছুটা রাগান্বিত হলে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার ইলিয়াস হাওলাদারকে বলেন, ‘আপনার মতো গ্রাহক আমাদের দরকার নেই। আপনাকে চেক বই দেব না, আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করেন। আমি ব্যাংক ম্যানেজারের চাকরি করি দেখে আমাকে কী মনে করেছেন, আপনি?
ইলিয়াস হাওলাদার বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ মাস যাবত চেক বই পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতেছি। চেক বইটি আমার জন্য খুব জরুরি। বারবার চেক বইয়ের খোঁজ নিতে গেলে ব্যাংক ব্যবস্থাপক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনার যদি বেশি জরুরি হয়, তাহলে আপনি অন্য ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলেন, আমাদের ঠিকাদার প্রয়োজন নেই। তখন আমি কিছুটা রাগান্বিত হলে তিনি আমাকে বলেন, ‘আপনি আমাকে চিনেন? আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক’।
মস্তফাপুর শাখা জনত ব্যাংক ব্যবস্থাপক মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমরা চেক বই পাওয়ার আবেদন ঢাকায় পাঠিয়েছি, তার একটা কপি আমরা তাকে দিয়েছি। তারপরও সে অফিসে আসার পর আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমাকে সে বলেছে, আপনি ব্যাংকের নিচে আসেন, দেখিয়ে দেব আমি কে? তখন আমি তাকে বলেছি আমিও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক।
জনতা ব্যাংক মাদারীপুর জেলার উপ মহাব্যবস্থাপক আলী আহম্মেদ খান বলেন, চেক-সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে কোনো এক গ্রাহকের সঙ্গে আমাদের ম্যানেজারের কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি বিষয়টি অবগত আছি। আসলে (এমআইসি) চেক পেতে সময় লাগে। তা ছাড়া হেড অফিস যদি চেক না দেয় আমাদের কিছু করার থাকে না। আমি দু’দিন ছুটিতে আছি। বৃহস্পতিবার ব্যাংকে গিয়ে আমি বিষয়টি দেখব’।
ব্যবস্থাপক আসলে ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক’ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারো সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না’।


আরো পড়ুন