প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ৩, ২০২৪, ৫:০৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১৪, ২০২১, ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ
তারা কি ভাবে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠানো হয় আমেরিকায়, মাদক কি ভাবে আসতো দেশে !
বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠানো হয় আমেরিকায়। সেই টাকায় কেনা হয় বিট কয়েন। তারপর এই ভার্চুয়াল মুদ্রা দিয়ে ডার্কসাইট থেকে কেনা হয় এলএসডি। পরে রাষ্ট্রীয় ডাক বা আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশে ঢুকছে ভয়ঙ্কর এই মাদক।
সম্প্রতি বন্ধুদের সঙ্গে উচ্চমাত্রার মাদক সেবনের পর প্রতিক্রিয়ায় নিজের গলায় দা চালিয়ে আত্মহত্যা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমান। তার এই মৃত্যুর তদন্তে নেমে ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডির সন্ধান পায় পুলিশ। প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার মাইক্রোগ্রাম এলএসডিসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পাঁচ দিনের রিমান্ডে এই দলের হোতা সাদমান সাকিব রুপল জানান, বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা প্রবাসী স্ত্রীকে টাকা পাঠাতেন তিনি। সেই টাকায় কেনা হতো বিট কয়েন। তারপর ডার্ক ওয়েবসাইটে ঢুকে এলএসডি কিনে রাষ্ট্রীয় ডাক বা আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশে পাঠিয়ে দিতেন রুপলের স্ত্রী। সেগুলো নিজেরা সেবনের পাশাপাশি বিক্রিও করতেন।
এই মাদকের প্রবেশ ঠেকাতে অনেকগুলো সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (রমনা) উপ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, 'এই মাদকটা অনেকদিন ধরেই চলে আসছে উচ্চবিত্তদের মধ্যে। আমরা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার যারা আছে তাদেরকে জানাবো। যাতে এইটা দেশে কোনভাবে না আসতে পারে।
ক'দিন বাদেই আরও প্রায় দুই হাজার মাইক্রোগ্রাম এলএসডিসহ পাঁচ তরুণকে গ্রেপ্তার ডিএমপির মতিঝিল বিভাগ। এই দলকে জিজ্ঞাসাবাদেও মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা জানিয়েছে, ফেসবুকে অন্তত দশটি গোপন গ্রুপ খুলে এলএসডি কেনাবেচায় জড়িত তারা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগ উপ কমিশনার আব্দুল আহাদ বলেন, 'তারা ১০টার মতো একাউন্ট ব্যবহার করে এই ব্যবসা চালায়। আমরা ৩/৪টা খুঁজে পেয়েছি কিন্ত তাদের বাকি একাউন্টগুলো বন্ধ। তার অর্থ তারা এটা আবার চালু করবে। এটার বিক্রি তারা নিজেদের সার্কেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। তবে এটা এখনও তৃণমূল পর্যায়ে পোঁছেনি।
এলএসডিসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পরও কোন বিকার ছিল না এই পাঁচ তরুণের। নিজেদের মধ্যে খুনসুটি আর হাসাহাসিতে মেতে ছিল তারা। এমনকি গণমাধ্যমের সামনে পোজও দিয়েছিল। এলএসডির প্রভাবে কোন কিছুকেই পরোয়া করেনি তারা উল্লেখ করে উপ কমিশনার আব্দুল আহাদ আরও বলেন, 'তারা যে হাসছে এটা তারা নিজেরও বুঝতে পারেনি যে তারা হাসছিল। কারণ, তাদের সেবনের প্রভাবটা তখনও কাটেনি।
এলএসডি এখনও শহুরে উচ্চবিত্ত তরুণদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এর সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান উপ কমিশনার আব্দুল আহাদ।
Copyright © 2024 Songbad TV. All rights reserved.