• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

মেয়েদের বহুগামিতা সহ্য করা যায় না, পুরুষদের যায়

অনলাইন ডেস্ক / ২৩৪ বার পঠিত
আপডেট: সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

— বহুগামিতা একেবারেই মানতে পারি না।

— মেয়েদের?
–শুধু মেয়েদের হবে কেন, পুরুষদেরও।
–কোনও পুরুষ  বহুগামী, এমন খবর  শুনলে এমন ছিঃ ছিঃ রব শোনা যায় না তো!
–আলবৎ শোনা যায়।
–একটা উদাহরণ দাও তো।
–এভাবে উদাহরণ দেওয়া যায় না কি?
–খুব যায়। শিল্প সাহিত্য নাটক সিনেমার জগতে  যে পুরুষ বহুগামী নয়,  এমন কয়েকজনের নাম বলো। অথবা যে কজন বহুগামী, তাদেরই নাম বলো।
–কী বলতে চাইছো?
–বলতে চাইছি, যে পুরুষেরা বহুগামী, তাদের বিরুদ্ধে তুমি কি সরব?
–নিশ্চয়ই।
–তুমি তো উত্তম কুমার বলতে অজ্ঞান। উনি  তো গৌরী দেবী এবং সুপ্রিয়া দেবী — দুজনের  সঙ্গে থাকতেন।  একসময়    গৌরী দেবীকে ছেড়ে   সুপ্রিয়া দেবীকে বিয়ে না করেই স্বামী স্ত্রীর মতোই থাকা শুরু করলেন।   তুমি তো উত্তম কুমারকে গালি দাও না। তুমি তো সমরেশ বসুরও নিন্দে করো না, উনি তো দু’বোনকে বিয়ে করেছিলেন।
–একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছেন, একে তো বহুগামিতা বলে না।
–তাহলে যে মেয়েটির নিন্দে করছো, সেও তো একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছে। যা করেছে প্রকাশ্যে, লুকিয়ে নয়, কাউকে ঠকিয়ে নয়।  তাহলে তার নিন্দে করছো কেন।

–সমরেশ বসু বা উত্তর কুমার অনেক বড়, এত বড়’র সঙ্গে কোথাকার কে, তার তুলনা চলে না।
–বড় হলে বুঝি অনৈতিক কাজ করা যায়? আর কোথাকার কে’দের জন্যই নীতি? নাকি শুধু মেয়েদের বেলায় নীতির প্রশ্ন ওঠে?
–বাজে কথা হচ্ছে।  আমি নারী -পুরুষকে আলাদা করে দেখিনা।
— তাহলে শুধু  মেয়েদের পতিতালয়  কেন, পুরুষদের পতিতলয় কেন নেই– এই প্রশ্ন কোনওদিন করেছো? বাই দ্যা ওয়ে,   পতিতালয়কে  যে আইনত বৈধ করা হয়েছে , তার বিরুদ্ধে কিছু বলো না কেন?
–কেন বলবো, পতিতালয় তো থাকা উচিত। আছে বলেই তো সমাজে ধর্ষণ কম হয়।
–হা হা হা। তাই বুঝি?
–হ্যাঁ তাই।
–তোমাদের বৈধ পতিতালয় তো বিবাহিত, অবিবাহিত সব পুরুষের জন্য। পতিতালয়ের গেটে তো সাইনবোর্ড নেই, ‘শুধু অবিবাহিত পুরুষ অ্যালাউড’। বিবাহিত পুরুষেরা যারা সেখানে যাচ্ছে, তারা  তো বহুগামিতা করছে। করছে না? বৈধ ভাবেই করছে। সে ক্ষেত্রে তো পুরুষের বহুগামিতা বৈধ।
–শুধু খারাপ লোকেরা যায় ওসব জায়গায়।
–তাহলে বলতে চাইছো খারাপ লোকদের জন্য বহুগামিতা ঠিক,  শুধু ভালো লোকদের জন্য ঠিক নয়?
–আমি তা বলতে চাইছি না, বহুগামিতা ব্যাপারটাই খারাপ।
–তাহলে পতিতালয়ে বিবাহিত পুরুষদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার কথা কোথাও মুখ ফুটে বলো না কেন?
–আমি বললে কে শুনবে।
–কিন্তু তুমি যে একটি মেয়ের বহুগামিতার বিরুদ্ধে চিৎকার করছো, ও তো অনেকে শুনছে।
–মেয়েদের এসব সহ্য করা যায় না।
–এই তো আসল কথা পাড়লে। মেয়েদের বহুগামিতা সহ্য করা যায় না, পুরুষদের বহুগামিতা সহ্য করা যায়।
–পুরুষ আর নারীর  শরীর তো এক নয়, পার্থক্য আছে। হরমোনের পার্থক্য।  পুরুষদের সেক্সটা বেশি দরকার হয়।
–এতক্ষণে অরিন্দম!  মনের কথাটি  আগে বলে ফেললেই পারতে। বলো যে পুরুষের বহুগামী হওয়ার অধিকার আছে, যেহেতু তাদের হরমোন বেশি সেক্স চায়, এক নারীতে তা মেটে না। কিন্তু নারীর বহুগামী হওয়ার কোনও অধিকার নেই। নারীকে  একগামী হতে হবে।
–আমাদের মায়েরা   কি কল্পনা করতে পারতো স্বামী ছাড়া অন্য কারও দিকে কোনওদিন  তাকাবে?
–তুমি চাইছো দুনিয়ার সব মেয়ে তোমাদের মায়ের মতো হোক।
–তা তো হয়নি, চারদিকে সব চরিত্রহীন বহুগামী মেয়ে।
–চারদিকে কি চরিত্রহীন বহুগামী পুরুষ নেই?
–উফ এসব শুনতে আর ভালো লাগছে না।


আরো পড়ুন