মাদারীপুরে একই স্থানে পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিক, ৩ জন পুলিশসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ সময় ৮টি মোটরসাইকেল ও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা,সাবেক এমপি মৌলভী আছমত আলী খানকে নিয়ে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ায় মাদারীপুরে বেশ কিছুদিন ধরে আওয়ামীলীগের শাজাহান খান গ্রুপের নেতা কর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার সময় মৌলভী আছমত আলী খানকে নিয়ে কটুক্তিকারী মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লার পদত্যাগের দাবিতে শাজাহান খান গ্রুপ সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কের কলাবাড়ি স্ট্যান্ডে একটি মানবন্ধনের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের সমর্থকরা একই সময় ঐ স্থানে মানববন্ধন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সেসময় উত্তেজিত নেতা কর্মীরা পার্শবর্তী ঘটকচর স্ট্যান্ডে ৮টি মটর সাইকেল ও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ৩ পুলিশ, এক সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হয়।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. এহসানুল রহমান ভুইয়া জানান, আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।এই পর্যন্ত কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাই। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দুয়া আওয়ামীলীগের উদ্যোগে রাস্তার পাশে মানববন্ধন চলছিল। এসময় শাজাহান খানের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান বলেন, মরহুম আচমত আলী খান জেলার সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক এমপি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তাকে স্বাধীনতা পদক দিয়েছেন আমাদের সফল প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই পদক নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন। শাহাবুদ্দিন মোল্লা তার বক্তব্যের মাধ্যমে শুধু  আচমত আলী খানকে নয় বরং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে অসম্মান করছেন । এখনও সময় আছে শাহাবুদ্দিন মোল্লা যদি শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চায় তা হলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তিনি তা না করে আমরা যেখানে প্রতিবাদ সভা বা মানববন্ধন করছি সেখানে লোক পাঠিয়ে হামলা করছেন। শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের মানববন্ধন ছিল সকাল ৮ টা থেকে ৯টা। আর আমাদের সময় ছিল সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা। ১০টার পরে আমরা মানববন্ধন করলে শাহাবুদ্দিন মোল্লার সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।