• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ন

আখভাঙা মেশিনে জীবনযুদ্ধ কিশোর 

মোঃ শাকিল মিয়া, গাইবান্ধা প্রতিনিধি / ১৮০ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

কিশোর হুইসাইন মিয়া। বয়স সবেমাত্র (১৫)। এ বয়সে বই-খাতা নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওযার কথা। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা। কিন্তু দরিদ্রতার কষাঘাতে সেটি তার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেঁচে থাকার চেষ্টায় আখভাঙা মেশিন নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে হাট-বাজার-গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। আর এই মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে বের করতে হচ্ছে আখের রস। এ রস বিক্রিতে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিশোর হুসাইনকে।
রবিবার (৬ মে) দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের গঙ্গানারায়ণ গ্রামে দেখা হয় হুসাইন মিয়ার। এসময় ভ্যানসেট মেশিনে আখ মাড়াইয়ে রস বিক্রি করছিল সে।
কিশোর হুসাইন মিয়ার বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে। এ গ্রামের শাহ আলম মিয়ার ছেলে সে।
জানা যায়, হুসাইন মিয়ার আরও এক ছোট ভাই রয়েছে। মাতাসহ মোট ৪ সদস্যের সংসার পিতার। বছর ৫ আগে এ সংসারে তেমন কোন অভাব অনটন ছিল না। এরই মধ্যে পিতা-মাতার অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা ব্যয়ে সর্বশান্ত হতে হয়েছে। যেন সুখের সংসারে দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত তাদের ।পরিবাররে সবার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। একটু জীবিকার সন্ধানে পিতা শাহ আলম মিয়া ছুটছিলেন এদিক-সেদিক। একপর্যায়ে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করা হয় ভ্রাম্যমান আখের রস বিক্রির ব্যবসা।
সেই সময়ে হুসাইন মিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র ছিল। লেখা পড়া করে বাবা-মার মুখে হাসি ফুটাবে, এমন স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু দরিদ্রতার কষাঘাতে সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। বই-খাতা ছেড়ে দিয়ে হাল ধরতে হয়েছে বাবার সংসারে। বাবার পাশাপাশি নিজেও শুরু করেছে আখের রস বিক্রির ব্যবসা। সারাদিন ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা হচ্ছে আখের রস। যেন তৃষ্ণার্ত মানুষের হাতে এক গ্লাস রস তুলে দেওয়ার বেঁচে থাকার অবলম্বন তার।
আখের রস খেতে আসা মোসলেম আলী মাষ্টার বলেন, আখের রস খেলে যেমন প্রাণজুড়িয়ে যায় তেমনি জন্ডিস রোগসহ বিভিন্ন রোগের জন্য আখের রস কার্যকারি।
কিশোর হুসাইন মিয়়া জানান স্থানীয়ভাবে আখ সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো বাড়িতে পরিস্কার করে ভ্যানসেট মেশিন নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলে ঘুরতে হয়। তৃষ্ণার্ত মানুষের তৃপ্তি দিতে তাৎক্ষণিক আখ মাড়াইয়ে রস বের করা হয়ে থাকে। প্রতি গ্লাস রসের দাম ১০ টাকা মাত্র। সারাদিন এ রস বিক্রিতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ হয়। এ দিয়ে চলছে দরিদ্র বাবা-মার সংসার। হুইসাইন
  মিয়া আরও বলেন, বাবার সংসারের অভাব অনটনের কারণে চুথ শ্রেণিতে লেখাপড়ার ইতি টানতে হয়েছে। এখন এ ব্যবসা করে সংসারে সহযোগিতা করছি।


আরো পড়ুন