• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

আমি মরণোত্তর দেহ দান করেছি: তসলিমা নাসরিন

অনলাইন ডেস্ক / ২৪২ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ১৫ মে, ২০২১

সারাজীবন যে আদর্শে বিশ্বাস করলেন, যে আদর্শের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করলেন, সারাজীবন যে স্বপ্ন দেখলেন, জীবনের শেষে এসে সেই আদর্শ রক্ষাও হলো না, স্বপ্ন পুরণও হলো না। এর চেয়ে বড় দুঃখ আর কী হতে পারে!

গণদর্পণের ব্রজ রায় মরণোত্তর দেহদান নিজেও করেছিলেন, মানুষকে করার প্রেরণাও দিয়েছিলেন। অথচ তিনি কোভিড রোগে মারা গিয়েছেন বলে মেডিক্যাল কলেজে তাঁর দেহদান সম্ভব হলো না। সেভাবেই সম্ভবত তাঁর সৎকার হয়েছে, যেভাবে তিনি কখনও চাননি তাঁর সৎকার হোক।

তিনিই ছিলেন গণদর্পণ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। গণদর্পণের রেজিস্টারে   মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী   শত শত আলোকিত মানুষের মরণোত্তর দেহদান  করার সই বা প্রতিশ্রুতি আছে। তাঁর সংগঠন থেকেই মৃত্যুর পর দেহ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা-বিজ্ঞানের গবেষণা-কাজের  জন্য দান করা হয়।   গণদর্পণের আপিসে গিয়ে  ২০০৫ সালে আমি  মরণোত্তর দেহদান করেছিলাম  । এরপর ২০০৭ সালে বুদ্ধবাবুরা আমাকে কলকাতা থেকে বিতাড়িত করার পর যেহেতু কলকাতায় ফেরার আর কোনও সম্ভাবনা নেই আমার, মরণোত্তর দেহদান দিল্লির এইমস হাসপাতালে আর নিউইয়র্কের ল্যাংগন হাসপাতালে করেছি।

ব্রজ রায়ের মৃত্যুতে আমি দুঃখ পেয়েছি। এই দুঃখ কিছুটা কমবে যদি জানতে পারি তাঁর গণদর্পণ সংগঠনটি আগের মতোই  কাজ করছে। আগের মতোই মানুষকে মরণোত্তর দেহদানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলছে, ধর্মবাদের অসারতার চেয়ে মানববাদের মহানুভবতা যে মূল্যবান,  বলছে।


আরো পড়ুন