• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন

“দারিদ্র্যতাকে জয় করে মেডিকেলে চান্স পেলেন চয়ন অধিকারী “

রকিবুজ্জামান, মাদারীপুর প্রতিনিধি / ১৫৩ বার পঠিত
আপডেট: সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১

দারিদ্রতার প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছেন কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের চয়ন অধিকারী । কৃষক বাবার দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে চয়ন অধিকারী এবছরের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে সম্মানের সাথে উত্তীর্ন হয়েছেন।
এমন একটি অসচ্ছল পরিবার থেকে মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়াটা ছিলো স্বপ্নের মতো। চয়ন অধিকারীর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগের খবরে আনন্দের জোয়ার বইছে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের মাঝে।
রামশীল গ্রামের কৃষক মনীন্দ্রনাথ অধিকারী স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে কৃৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। ছোটবেলা থেকেই চয়ন অধিকারী পড়াশোনায় খুবই আগ্রহী ছিলেন। আর্থিক অসচ্ছলতাকে উপেক্ষা করেই অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ২০১৮ সালে পূর্ব কোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়। এরপরে নিজ গ্রামে রামশীল কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে এইচ.এস.সি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়। অদম্য মেধাবী চয়ন অধিকারীর ছোটবেলা স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার, এইচ.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েই প্রস্তুতি নিতে থাকে মেডিকেলে পরীক্ষ দিতে। পরবর্তীতে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে এম.বি.বি.এস এ চান্স পায় চয়ন অধিকারী।
চয়নের এই সাফল্য অর্জনে আনন্দিত হয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রামশীল কলেজের অধ্যক্ষ জয়দেব বালা বলেন, ছেলেটা যখন এস.এস.সি পাশ করে আমার কাছে আসে তখনই ওর মধ্যে আমি আলাদা কিছু অনুভব করেছিলাম, বুঝতে পেরেছিলাম এই ছেলেটার বড় কিছু হওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আছে। এরপর থেকেই আমি এবং আমার কলেজের প্রতিটি শিক্ষকই সন্তানর মতোই ওকে পরিচর্যা করেছি এমনকি আমার কলেজে পড়াশোনার জন্য একটি অর্থও চয়নের কাছ থেকে নেইনি আমরা। আমি চয়নকে আরও বলেছি যে, মেডিকেলে পড়ার সময়েও যদি কখনো কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তবে আমি সর্বদাই ওর পাশে আছি।
এই বিষয়ে চয়ন অধিকারীর কাছে তার অনুভুতির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ১১১৩ তম মেধাক্রমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছি, আমি ধন্যবাদ দিতে চাই যাদের উদ্দীপনা অনুপ্রেরণা উৎসাহ বিশেষ করে আমার পরিবার ও প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজসহ আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও শিক্ষিকা বৃন্দ কে। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই আমাদের অধ্যক্ষ স্যার ও বিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শেখর চন্দ্র পাল স্যার কে, তাহারা আমাকে সব সময় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। আমি সবার কাছে আশীর্বাদ কামনা করছি আমি যেন অত্যন্ত সফলতার সহিত মেডিকেল পড়া শেষ করে এই মহান পেশায় নিজেকে সমর্পিতকরে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে অবদান রাখতে পারি ।


আরো পড়ুন