• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন

ধর্মপাশায় সুনুই জলমহাল লুটের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রোকন সহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ!

মোবারক হোসাইন, ধর্মপাশা সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি / ৩০৮ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১

সুনামগঞ্জ জেলা ধর্মপাশা উপজেলার  মনাই নদী প্রকাশিত সুনই জলমহাল থেকে কয়েকজন মৎস্যজীবীকে মারধর করে প্রায় চার লাখ টাকা মূল্যের মাছ লুটের ঘটনা নিয়ে ধর্মপাশা থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া  হয়েছে। উপজেলার সুনই মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি চন্দন বর্মণ (৩৬)বাদী হয়ে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন (৩২)ও তাঁর আপন বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোবারক হোসেন মাসুদ (৫৫)সহ ৪২জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২৪/২৫জন আসামি করে (২৮ফেব্রুয়ারি) রোববার  রাত ১০টার দিকে এই অভিযোগটি করেছেন। গত শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি)  বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে উপজেলার সুনই জলমহালে এই  ঘটনা ঘটে।
 উপজেলা প্রশাসন, ধর্মপাশা থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের মনাই নদী প্রকাশিত সুনই জলমহালটি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন।১৪২২বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২৭বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ছয় বছরের জন্য এটি ইজারা পায় সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতিটির সভাপতি চন্দন বর্মণসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকনের অনুসারী সুবল বর্মণের (৪০) সুনই জলমহাল সংক্রান্ত বিরোধসহ দুই পক্ষেরই আদালতে পৃথক মামলা মোকাদ্দমা চলে আসছিল। গত শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি)  বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুসারীরা সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সুনই জলমহালে যান এবং সেখানে সুনই মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যদের তিনটি নৌকায় জলমহাল থেকে আহরন করে রাখা  প্রায় চার লাখ টাকার মাছ লুটে নিয়ে যায় উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীরা।
সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে সমিতির সহ সভাপতি মণীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ (৫৫) বলেন, সুনই জলমহালটির বৈধ ইজারাদার হওয়ায় আমরা আদালত থেকে মামলার রায় পেয়েছি। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রোকনের নির্দেশে আমার বড় ভাই শ্যামাচরণ বর্মণ হত্যার ঘটনায় জড়িত বেশির ভাগ আসামিরা ও নতুন কিছু অপরিচিত লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে (২৭ ফেব্রুয়ারি)  শনিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে আমাদের তিনটি  নৌকায় মৎস্য আহরণ করে রাখা চার লাখ টাকার মাছ লুটে নিয়ে গেছে। এতে বাধা দিতে গিয়ে আমাদের সমিতির ৮/১০জন সদস্য কিল ঘুষি ও লাথি মারা হয়েছে।ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর বড় ভাইসহ ৪২জনকে আসামি করে  থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও এটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়নি।
 অভিযোগের  বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন আজ সোমবার সকাল সোয়া  নয়টার  দিকে মুঠোফোনে সাংবাদিকদের  বলেন, সুনই জলমহালটি থেকে মাছ লুটের ঘটনায় নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। অভিযোগটি  তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, জলমহালটি নিয়ে উচ্চ আদালতে সুনই মৎস্যজীবী সসমিতির পৃথক দুটি মামলা ছিল। কিন্ত উচ্চ আদালত থেকে সম্প্রতি সুবলদের মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে।
মোবারক হোসাইন


আরো পড়ুন