• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১২ অপরাহ্ন

প্রতিদিন ধর্ষণ, হত্যা – টিভি ও পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত সংবাদ

/ ৩৭১ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯

মেহেদী হাসানঃ- প্রতিদিনই টিভি’র পর্দা, পত্রিকার পাতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রবেশ করলেই চোখ কপালে উঠে আসে একটি শব্দ দেখে “ধর্ষণের বর্ষণ”। কখনো শিশু,কখনো কিশোরী কখনো ৫-৬ সন্তানের জননী কিম্বা নববধূ। এমনকি রেহাই পাচ্ছে না বাক বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরাও। শুধু তাই নয়, ধর্ষণ শেষে নির্মম নির্যাতন, এমনকি চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে কিংবা আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। মানুষ নামধারীরা এক বিভত্স রূপ নিয়ে হাজির হচ্ছে আমাদের কন্যাশিশু, কিশোরী ও নারীদের সামনে। যদিও নারী সমাজ আজ সোচ্চার তবুও বন্ধ হয়নি পুরুষ শাসিত অত্যাচার, চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে নিজ গৃহ থেকে শুরু করে কর্মস্থল তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত। ধর্ষণের ঘটনা গত কয়েক বছর উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। ধর্ষণের ঘটনা যে কোন সভ্য মানুষকে আরো বেশি বিচলিত করবে। আরো বিচলিত হবার বিষয় হচ্ছে– আপনজন ও পরিচিতজনদের দ্বারাই বেশি ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে ভোক্তভোগীদের।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই ৬ মাসে বাংলাদেশে ৩৯৯ জন শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ধর্ষণের পর একজন ছেলে শিশুসহ মোট ১৬ জন শিশু মারা গেছে। ঢাকার ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ৪০৮টি সংবাদ বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি এই তথ্য পেয়েছে। প্রতিবেদনের আরো বলা হয়েছে যে, অন্তত ৪৯টি শিশু (৪৭ জন মেয়েশিশু ও ২ জন ছেলেশিশু) যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালে ৩৫৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। এর মধ্যে মারা গিয়েছিল ২২ জন এবং আহত হয়েছিল ৩৩৪ জন।

পরিসংখ্যানে ধর্ষণের এসব চিত্র দেখলে যে কোন সুস্থ মানুষের গা শিউরে উঠবে। কেন বাংলাদেশে এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হয়তো অনেক সমাজবিজ্ঞানীর ঘুম উড়ে যাচ্ছে। একের পর এক ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও কোনোভাবেই যেন এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়েও ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে এমন খবরও পত্রিকার পাতায় স্থান পেয়েছে। একটি দুটি বিচার সম্পন্ন করে ধর্ষণের কলঙ্ক থেকে বাংলাদেশ রেহাই পাবে না সে কথা চোখের সামনে অনেকটাই পরিষ্কার। সু-সংস্কৃতিহীন ঘুণে ধরা এই সমাজের মগজ পরিষ্কার না করলে ধর্ষণ নির্মূল কোনো ভাবেই সম্ভব না তাও পরিষ্কার।

লেখকঃ মেহেদী হাসান, ছাত্র ও সাংবাদিক।


আরো পড়ুন